মানিকগঞ্জঃ শিবালয়ের নিম্নাঞ্চল অকাল বর্ষার পানিতে মরিচের ক্ষেত ডুবে ও মরে যাওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে পাহাড়ি ঢলের কারনে পদ্মা-যমুনা নদীতে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল নদীর পানিতে প্লাবিত হওয়ায় মরিচ ক্ষেত দ্রুত তলিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর আষার মাসের শেষের দিকে বর্ষা হয়। কিন্ত এবার আষার মাষের শুরুতেই বর্ষার পানি এসে মরিচ ক্ষেত ডুবে যাচ্ছে। এদিকে হাট বাজারে মরিচের দাম কম হওয়ায় মরিচ তোলার খরচই ওঠছে না। পানির মধ্যে দাড়িয়ে মরিচ তুলতে হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দাম কম হওয়ায় অনেক কৃষকের মরিচ পেঁকে ক্ষেতে ঝড়ে পড়ছে।
উপজেলার চরের ভাঙ্গা নতুন ফরিদপুরের কৃষক আফজাল হোসেন জানান, সে চার বিঘা ফসলি মাঠে কাঁচা মরিচের আবাদ করেছেন। ক্ষেত থেকে প্রতি কেজি মরিচ তুলতে খরচ শ্রমিকদেরকে দিকে হয় ৭টাকা। গত ২০-২৬ দিন আগে এক কেজি মরিচ হাট-বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০টাকা। কিন্ত লকডাউন ও প্রায় মরিচ ক্ষেতে পানি ওঠায় এখন প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে ৭-৮ টাকা করে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ তুলতে ৭টাকা করে দিয়েও লকডাউনের মধ্যে শ্রমিক পাওয়া হচ্ছে না। একারনে আমরা অনেক ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেলেও মরিচ তুলতে পারছি না।
উপজেলার ভাকলা গ্রামের সাবদুল হোসেন জানান, সে এবার তিন বিঘা জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করেছেন। গত কয়েক দিন আগে মরিচের দাম ভালো পাওয়া গেলেও এখন শ্রমিকদেরকে দিয়ে যে দামে কাঁচা মরিচ তুলতে হচ্ছে সে দামেও বিক্রি করতে হয়। এদিকে মরিচ ক্ষেত দ্রুত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে অপর দিকে যে টাকা দিয়ে মরিচ তুলতে হচ্ছে সেই দামে হাট বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। একারনে কাঁচা মরিচ তুলছেন না তারা। একারনে ক্ষেতেই কাঁচা মরিচ ঝড়ে পড়ছে।
কাঁচা মরিচের মহাজন ফরিদ হোসেন জানান, লকডাউনের কারনে কাঁচা বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করতে সমস্যা হচ্ছে। একারনে আমরা কাঁচা মরিচ ৪০-৪৫ মণ করে ক্রয় করছি। আগে আমরা প্রতি হাটে দুই-তিনশ’ মণ করে ক্রয় করতাম। এখন লকডাউনের মধ্যে মরিচ ক্রয় করে বিক্রি করতে সমস্যা হচ্ছে। কারন মরিচ রপ্তানি করতে পারছি না।
উপজেলা কৃষি অফিসার রিয়াজুর রহমান জানান, এবার উপজেলায় ১৫শ’ ৫ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষমাত্রা ছিল ১৪শ’ ৯ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে প্রতি হেক্টরে ১০.৫হেক্টর। তবে কাঁচা মরিচের বীজ ও সার বিনামুল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরন করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার কাঁচা মরিচ ভালো ফলন হয়েছে।